• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী এমদাদিয়া মাদ্রাসার ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে মূখে অনিদিষ্টকালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা আজ রোববার বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার হল ত্যাগ করে

প্রকাশ:  ২৩ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুরে গত এক সপ্তাহ ব্যাপী চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ঐতিহ্যবাহী জাফরাবাদ জামিয়া আরাবিয়া এমদাদিয়া (দাওরায়ে হাদীস) মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের ৫শতাধিক শিক্ষার্থীরা একজন মাদ্রাসা শিক্ষককে চাকরীচ্যুত,অধ্যক্ষের অপসারনের(মুহতামিম) দাবীতে ব্যাপক বিক্ষোভ,ভাংচুর ও প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে ব্যর্থ হয়ে অনিদিষ্ট কালের জন্য মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা করেছে।
আন্দোলনরত ছাত্ররা মাদ্রাসার মুহতামিম জাফর আহমদের অপসারণ দাবিতে অনড় থাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান হয়নি। মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার পর আজ রোববার বিকেলের মধ্যে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার হল ত্যাগ করে তাদের গন্তব্যে চলে যেতে দেখা যায়। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে।

যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাদ্রাসা আপাতত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদ্রাসায় অবস্থান করে ছাত্র-শিক্ষকদের বুঝিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত সবাই যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখে সে অনুরোধ করি।

একই ভাবে গতকাল শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জাফরাবাদ জামিয়া আরাবিয়া এমদাদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ,ভাংচুর,বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে ও প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং তারা এ মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মনসুর আহমেদকে পুর্নবহালের দাবি, ও মাদ্রাসার মুহতামিম জাফর আহম্মেদকে অপসারনের দাবী জানান। গত বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার মুহতামিম জাফর আহম্মেদ ও শিক্ষা সচিব মুফতি মাসুম বিল্লাহকে বহিস্কারসহ ৬ দফা দাবী নিয়ে আন্দোলনে মেতে উঠে ।

খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স এবং ওসি তদন্ত হারুনুর রশিদও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ওসি মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিন ছাত্রদের আন্দোলনের দাবির বিষয়টি লিখিতভাবে দেয়ার পরামর্শ দেন।

এদিকে একটি সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করছেন। বৈঠকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ্ব শেখ মোঃ হারুন অর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ আখন্দ, কোষাধ্যক্ষ হাজী আবুল কাসেম গাজী, সহ-সভাপতি হাজী বিল্লাল পাটোয়ারী, বেগম ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক হাবিবুর রহমান, চাঁদপুর চেম্বারের পরিচালক সালাউদ্দিন মোঃ বাবর, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ হাসানসহ এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জাফর আহম্মেদের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, আমাদের এই মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ২ জন হাফেজ দায়িত্ব পালন করে আসছে এদের মধ্যে হাফেজ মুনছুর আহম্মেদের বাড়ী মাদ্রাসার নিকটে হওয়ায় যার কারনে সে প্রতিদিন বাড়ীতে আসা যাওয়া করতো এবং কিছু হলেই এলাকার লোকজন দিয়ে মাদ্রাসায় প্রভাব বিস্তার করতো,এবং প্রতিদিনই ছাত্রদের পড়াদিয়ে সে বাড়ী চলে যেত, এনিয়ে ছাত্রদের অভিযোগের কারনে আমি কয়েক শিক্ষকের উপস্থিতিতে মুনছুর আহম্মেদকে ডেকে সতর্ক করি, যেন বাড়ীতে আসা-যাওয়া কম করে, ছাত্রদের পড়ার মান দিনদিন অবনতি হচ্ছে। তা বাড়াতে হবে এ কথা বলার পর সে ১৬ নভেম্বের অব্যাহতি পত্র জমা দেয়, সে আর চাকুরি করবেনা বলে যানিয়ে দেয়।

 ছাতরা জানান, এর পূর্বেও হঠাৎ করে দুজন সুযোগ্য হাফেজ সাহেব (হাফেজ নূর মোহাম্মদ ও অত্র এলাকার কৃতী সন্তান যিনি এই মাদ্রাসায় দীর্ঘ ২১ বছর কোরআনের খেদমত করে আসছেন। মাদ্রাসা থেকে চলে যাওয়ার কারণ কি? তারা কি স্বেচ্ছায় গিয়েছেন নাকি যেতে বাধ্য করা হয়েছে?
ইতোপূর্বে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের কোন প্রকার নোটিশ ছাড়া বিনা কারণে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হল কেন ? যেমন মুফতি শাহাদাত হোসাইন কাসেমী, মুফতি ইসমাইল সাহেব (দা:বা) গতবছর পবিত্র ঈদুল আযহার দিন নূরানী বিভাগের একজন ওস্তাদ ক্বারী রফিকুল ইসলাম সাহেবকে চামড়া কম কালেকশন করায় মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়? মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন আটকে রাখা হয় কেন? এমন আরও অনেক দাবি নিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বাধিক পঠিত