• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

অযাচক আশ্রমে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া অখণ্ড সম্মেলন সম্পন্ন

স্বরূপানন্দ চাঁদপুরবাসীর গর্ব বলে তার জন্মস্থানের পুণ্যতা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য : মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল

প্রকাশ:  ২২ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

অযাচক আশ্রম চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত শাশ্বত গুরু অখণ্ড মণ্ডলেশ্বর শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব প্রতিষ্ঠিত ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া অখণ্ড সম্মেলন ২০২০ সম্পন্ন হয়েছে। দুদিনব্যাপী সম্মেলনের গত ২০ নভেম্বর শুক্রবার ছিল শেষদিন। এদিন সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি শ্রী শ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবকে একজন মহাসাধক উল্লেখ করে বলেন, যুগে যুগে সকল ধর্মেই মহামানবদের আবির্ভাব ঘটেছে। তারা পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের জন্য মানুষের কল্যাণ চিন্তায় কাজ করেছেন, হানাহানি, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য মানুষকে উজ্জীবিত করতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমরা এ সকল মহামানবদের দেখানো পথ অনুসরণ করিনি। তাদের সুমহান কল্যাণ চিন্তাকে প্রাধান্য দেইনি। সৃষ্টিকর্তার আদর্শ মেনে চলিনি, তাই আমাদের মানসিকতায় দেখা দিয়েছে অশান্তি, জড়িয়ে পড়েছি বিভিন্ন অপকর্মে, সৃষ্টি হয়েছে নিজেদের মধ্যে হানাহানি, মারামারি। আমাদেরকে সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথ অনুসরণ করতে হবে, তাহলেই আমরা শান্তিময় বিশ্ব গড়তে সক্ষম হবো।


তিনি আরো বলেন, স্বামী স্বরূপানন্দ আমাদের চাঁদপুরবাসীর গর্ব। তিনি চাঁদপুরের পুণ্য মাটিতে জন্মগ্রহণ করে আমাদেরকে গর্বিত করেছেন। তার এ জন্মস্থানের পুণ্যতা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। তিনি যেকোনো প্রয়োজনে আশ্রমের পাশে থাকার অঙ্গীকার প্রদান করে আরো বলেন, সদ্য প্রয়াত আশ্রমের অধ্যক্ষ কবিরাজ সুখরঞ্জন ব্রহ্মচারী একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তিনি শুধু ধর্মসাধনাই করেননি, সমাজের জন্যেও কাজ করেছেন। তার আহ্বানে এ পবিত্রস্থানে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিসহ বহু গুণীজনের আগমন ঘটেছে। সুখরঞ্জন ব্রহ্মচারীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিল এ পুণ্যস্থানে স্বামী স্বরূপানন্দের আন্তর্জাতিক মানের ধ্যান মন্দির নির্মাণ করা। ধ্যান মন্দির নির্মাণ হলে আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন মত ও পথের মানুষ মন্দির দর্শনে চাঁদপুর আসবেন। ফলে আমাদের এ শহর সকলের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করবে। আপনারা ধ্যান মন্দির নির্মাণে কাজ করবেন। চাঁদপুরবাসী আপনাদের পাশে রয়েছেন। তিনি বলেন মন্দির, মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ার ক্ষেত্রে কোনো বিরোধ নয়, সহযোগিতাই হবে আমাদের কর্তব্য।

 


সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠন চাঁদপুর আঞ্চলিক শাখার সভাপতি অধ্যাপক রাধেশ্যাম কুরির সভাপ্রধানে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের (বাসঅস) সচিব সুজিত কুমার দে, পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনা পরিষদের সচিব তাপস সরকার, পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্টের সচিব মৃনাল কান্তি দাস, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল সাহা, পৌর কাউন্সিলর আঃ মালেক শেখ, মোঃ ইউনুস শোয়েব প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক দুলাল দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্টের সদস্য রোটাঃ গৌতম সাহা। অখণ্ড সংহিতা পাঠ করেন অরুন কুমার ঘোষ। বিশিষ্ট কণ্ঠ শিল্পী রোটাঃ মানিক রায়ের পরিচালনায় অখণ্ড সংগীত পরিবেশন করেন সাথী দাস, বীথি রায় প্রমুখ।

বিকেল ৩টায় পুণ্য জন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনা পরিষদ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।দুলাল দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় সারাদেশের ৫০টি অখণ্ড মণ্ডলীর প্রতিনিধিগণ যোগ দেন। তারা চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করার অঙ্গীকার প্রদান করেন। এক্ষেত্রে কেউ কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হলে তা সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করা হবে বলে সকলে সহমত প্রকাশ করেন। মন্দিরে এ যাবৎকাল যে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান সাধিত হয়েছে তা অব্যাহত রাখাসহ বাবামণির পুণ্য জন্মস্থানে শুভ জন্মমাসে শুভ জন্মোৎসব উদ্যাপন, আন্তর্জাতিক ধ্যান মন্দির নির্মাণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গৃহীত হয়। এর আগে সকালে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় সমবেত উপাসনা অনুষ্ঠিত হয় এবং দুপুরে বিতরণ করা হয় মহাপ্রসাদ। সম্মেলনকে ঘিরে ভক্তদের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক আর করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিধি পালনে সকলের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে আশ্রম কর্তৃপক্ষ ছিলেন তৎপর।

সর্বাধিক পঠিত