• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

ফলোআপ : রাজরাজেশ্বর চরে নৌ পুলিশের উপর হামলা

এজাহারনামীয় ৩৯ ও অজ্ঞাত প্রায় ৬০০ জনকে আসামী করে মামলা

তদন্ত করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে : নৌ এসপি ফরিদ আহমেদ

প্রকাশ:  ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৮:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চলমান ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালনার সময় চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর মেঘনার চরে নৌ-পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের টহল টিমের উপর জেলে দস্যু ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হামলায় ২০ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। ২৫ অক্টোবর সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সময় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর লাগোয়া শিলারচর নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় নৌ-পুলিশের এসআই ইলিয়াছ মাদবর বাদী হয়ে ২৬ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করেন। যার নং ৪৮, তারিখ ২৬/১০/২০২০।


মামলায় ওইদিন অভিযানের সময় মেঘনা নদী থেকে আটক ৭ জেলেসহ এজাহারনামীয় ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৫শ' থেকে ৬শ' জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। আটক ৭ জেলেকে ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার এই মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করার পর আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

 


এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আটক জেলেরাসহ অন্য জেলেরা রাজরাজেশ্বর শিলারচর এলাকার রনি মেম্বার (৩২) ও আমির দেওয়ানের (৪৫) নেতৃত্বে আইন অমান্য করে নদীতে মাছ ধরতে যায়। সেখানে নৌ পুলিশের সদর দপ্তর থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নৌযান সদস্যরা বড় নৌযান নিয়ে ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করতে গেলে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল তাদের হেফাজতে নিতে পুলিশের উপর সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায়। এতে তারা পেনাল কোড আইনের ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩, ১৪৭/৩৪ ধারা তৎসহ মৎস্য সংরক্ষণ আইন হাজার ১৯৫০ সালের ৫(২) (খ) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক বাদী এ মামলা দায়ের করেন।

 


মামলায় আটকৃতরা হলেন অভিযানে আটক ৭ জেলে মাহফুজ, ইব্রাহিম খলিল, কামিল হোসেন, মোঃ শাহ জালাল, মোঃ রুবেল, নবীর হোসেন ও ওমর ফারুক। তারা কারাগারে রয়েছেন।

এছাড়া মামলার এজহারনামীয় পলাতক আসামী হিসেবে আড়তদার রাকিবুল দেওয়ান, মোস্তফা মোল্লা, আব্দুল মোল্লা, ওচমান মোল্লা, মুকবুল মেম্বার, রণি মেম্বারসহ মোট ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

গত ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় মা ইলিশ রক্ষায় নৌপুলিশের কর্মকর্তা ও শতাধিক সদস্যসহ একটি দল চাঁদপুর ও শরিয়তপুরের বিভিন্ন নদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঁদপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলে রাজরাজেশ্বরে ইলিশ শিকারে বাধা দিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলাল উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ফরিদা ফারভীন, পুলিশ পরিদর্শক মুজাহিদুল ইসলাম, নায়ক ইকবাল হোসেন, ইলিয়াছ হোসেন, শাহ্ আলম, কনস্টেবল আল মামুন, ফেরদৌস শেখ, আল-আমিন, কাউছার হোসেন, মোনায়েম আহম্মেদ ও প্রসেনজিৎসহ অনেক পুলিশ সদস্য আহত হন।

চাঁদপুর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন খান জানান, পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাৎক্ষণিক ঘটনার সময় পুলিশ ৩০৪ রাউন্ড রাবার বুলেট, স্প্রিন্টার, ১৩ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ৫ রাউন্ড রাইফেলের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। তিনি বলেন, ইলিশের অভিযান শেষ হলে আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য জোরালো তৎপরতা চালানো হবে।

চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার ফরিদ আহমেদ জানান, আহতদের ৯ জনকে ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তারা শঙ্কামুক্ত। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় যারা মাছ ধরছে তাদের অনেকে বহিরাগত। রাজরাজেশ্বর ও বহিরাগত একত্রিত হয়ে এমন এই ঘটনা ঘটানোর সাহস দেখিয়েছে। যারা আইন ভেঙেছে এবং পুলিশের পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে। পুলিশ জনগণের সেবক, আমরা ওই ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারবো কারা কারা অপরাধী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরীহ কোনো মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়টিও আমাদের নজরে রয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত