• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুরে করোনার উপসর্গ নিয়ে আরো ৪ জনের মুত্যু

প্রকাশ:  ১৮ এপ্রিল ২০২০, ১২:২৭ | আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২০, ১২:৩৫
স্টাফ রিপোর্টার।।
প্রিন্ট

করোনার উপসর্গ নিয়ে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে আরো ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শিশুসহ ২ জন ঢাকা মেডিকেল, ১ জন কুমিল্লা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, ১জন নিজ বাড়িতে ও ১জন হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। করোনায় আক্রান্তে মৃত্যু কিনা তা শনাক্তে তাদের সবার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারীকান্দি গ্রামের ৩০ বছর বয়সী এক যুবক বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন। জ্বর, সর্দি, কাশি প্রভৃতি করোনার উপসর্গ ছিল তার। অসুস্থ অবস্থায় তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে তার শ্বশুর বাড়িতে ছিলেন বেশ কয়েক দিন। সেখান থেকে বুধবার তাকে মতলব উত্তর উপজেলার পুতিয়ারপাড় এলাকায় অবস্থিত বোনের বাড়িতে দিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। [[স্থানীয় লোকজন অসুস্থতার কারণে তাকে সেখানে থাকতে আপত্তি করলে বৃহস্পতিবার সকালে শিকারিকান্দি গ্রামের নিজ বাড়িতে আনা হয়। দুপুরে তিনি মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহের জন্য সিভিল সার্জন অফিস থেকে লোক পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন।

এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের রশিদ হাওলাদার নামে ৩০ বছর বয়সী এক যুবক বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজিতেই মৃত্যুবরণ করেন। চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, রশিদ হাওলাদার নামে যে লোকটি মারা গেছে তার মৃত্যুটি সন্দেহজনক। সে পেটের ব্যাথায় আক্রান্ত ছিল। এটিও করোনার একটি উপসর্গ। সেখানে করোনার একজনের পজেটিভ কেইস রয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রামপুরে করোনায় মারা যাওয়া ফয়সাল নামে ব্যক্তির ক্ষেত্রেও আমাদের সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি। পরে রিপোর্ট এসেছে পজেটিভ। তাই আমরা কোনো রিস্ক নিতে চাই না। মৃত যুবকের নমুনা সংগ্রহ ও বিশেষ ব্যবস্থায় দাফনের জন্য লোকবল পাঠিয়েছি। নমুনা আইইডিসিআর-এ পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে মৃত যুবক করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা।[

অন্যদিকে শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের নরিংপুর গ্রামের ৬ বছর বয়সী এক শিশু নিউমোনিয়াসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে শিশুটি মারা যায়। এরপর করোনা টেস্টের জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রিপোর্ট আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে শিশুটি করোনায় আক্রন্ত ছিল কিনা। শাহরাস্তি উপজেলা প্রশাসন ও কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, শিশুটির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

এর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট এলাকার ৫০ বছর বয়সী এক সিএনজি অটোরিক্সার চালক প্রায় ২ সপ্তাহ আগে মতলবে মোটরসাইকেল চালাতে যেয়ে আরেকটি মোটরসাইকেলের সাথে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়। বিশেষ করে তার মাথা মারাত্মকভাবে জখম হয়। চাঁদপুর সদর হাসপাতাল হয়ে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাত তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মারা যাওয়ার ২/৩ দিন আগে ওই ব্যক্তির পাশের সিটের একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর মাধ্যমে তার মধ্যেও করোনার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। মারা যাওয়ার পর তার শরীর থেকে করোনা টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার মৃতদেহ এখনো হাসপাতালে আছে। 

সূত্র আরো জানায়, ওই ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে বলে পরিবারকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো কাগজপত্র পাওয়া না যাওয়ায় করোনার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, চাঁদপুর সদর ও মতলব উত্তরে ২জন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার খবর আমি পেয়েছি। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিক্যাল ও কুমিল্লা মেডিক্যালে মারা যাওয়ার বিষয়টি জানা নেই। আমাকে সেখান থেকে জানানোর কথাও না।

সর্বাধিক পঠিত